
ছোটোবেলা থেকে ঘুরে আসলাম যেন...

Baharin Siddika
October 22, 2022
তোত্তোচান, পিচকু একটা মেয়ে। মেয়ে বললে ভুল হবে, তোত্তোচান মেয়েরূপী একটা ফড়িং যেটা তিড়িংতিড়িং করে লাফ ঝাপ দেয়, কখনো বালির মধ্যে আবার কখনো ময়লার মধ্যে। এই পিচকু মেয়ে তার শিক্ষাজীবনের প্রথম সারিতেই একরকম পা ফসকে পড়ে গিয়েছিলো। সে কিছুতেই চলতিধারার বই-পত্তর, চক -সিলেট-ডাস্টারের ক্লাসরুমে মন বসাতে পারেনা। তা মন থাকে ডেস্ক খোলা বন্ধের শব্দে,পাখিদের কিচিরমিচির এ। শিক্ষিকা যখন পড়াতেন সে জানালায় চেয়ে অপেক্ষা করতো ক্যানভাসার দলের গানের।শিক্ষিকার মতে এই দুষ্টু মেয়েকে দিয়ে পড়ালেখা হবেনা। মা তো এবার ভীষণ চিন্তায় পরেন।এতটুক মেয়েকে স্কুল থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।এ ভীষণ চিন্তারই বিষয়। তবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পূর্ববর্তী সময়ে দাঁড়িয়েও তোত্তচানের মা তার এই অধিক চঞ্চলতা, উৎসাহ, কৌতূহল এর জন্য তার পিঠের চামড়া লাল করেনি বরং বিকল্প পথ খুঁজেছেন। চিন্তার অবসান ঘটিয়ে "তোমায়ে" স্কুলে ভর্তি করা হয় তোত্তোচান কে।এই তোমায়ে স্কুলে তোত্তোচান এর বেড়ে ওঠা নিয়েই পুরো বই। বই পড়ে বারবার মনে হয়েছে এই স্কুলটাতে আমি কেন পড়তে পারলাম না! পড়তে পারলে বেশ মজা হতো। শিক্ষা মানে যে শেখা এবং শিক্ষক মানে যিনি শিক্ষা দেন এই দুটো বিষয় বারবার এসেছে বইয়ে।নিজের কাজ নিজে করাতে লজ্জা নেই এটা যেমন শিখতে পেরেছিলো ওইটুকু পিচকু মেয়ে তেমনি শিখেছিল অন্যকে কষ্ট না দিতে চাইলে কখনো কখনো নিজের আনন্দ লুকিয়ে রাখতে হয়।সর্বোপরি, চলতি নিয়মের বাইরে গিয়ে চিন্তা করাও যে একটা স্কুল এর নিয়ম হতে পারে সেটাই ফুটে উঠেছে পুরো বই জুড়ে।মানুষ বৈচিত্র্যতা দিয়ে পরিপূর্ণ তবে এই বিচিত্রিতাকে খুঁজে বের করতে না পারলে অথবা চেষ্টা না করলে পুরো জীবনই নিয়মে বাধা পরে যায়।
Processing...